নবজাতকের জন্ডিস হলে কী করবেন – বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “শিশুর প্রতিদিনের পরিচর্যা” বিষয়ক সিরিজের অংশ। শিশুর প্রতিদিনের পরিচর্যা সুচিপত্র, শিশু ভূমিষ্ঠকালীন ব্যক্তির প্রাথমিক রূপ। যে এখনও যৌবনপ্রাপ্ত হয় নাই কিংবা বয়ঃসন্ধিক্ষণে প্রবেশ করেনি সে শিশু হিসেবে সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে চিহ্নিত হয়ে আছে। সচরাচর যে ছেলে বা মেয়ের বয়স ১৮ বছরের নিচে অবস্থান করছে সে শিশু হিসেবে চিহ্নিত।
নবজাতকের জন্ডিস হলে কী করবেন | শিশুর প্রতিদিনের পরিচর্যা
১। নবজাতকের জন্ডিস হলে প্রথমেই বাবা-মাকে ধৈর্যধারণ করতে হবে । এটি কোনো বংশগত বা ছোঁয়াচে রোগ নয় । এটা আপনা-আপনি সেরে যায় । এ অবস্থায় শিশুকে প্রতিদিন সকালে ১০-১৫ মিনিট করে ২/৩ বার রোদে রাখুন । ঘরের মধ্যে কাচের জানালা দিয়ে যে রোদ আসে সেখানে রাখলে ভালো হয়। এ সময় শিশুর মাথা ছায়ায় রাখতে হবে অথবা মাথায় যেন রোদ না লাগে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। রোদে থাকাকালীন কয়েকবার শিশুকে এপাশ-ওপাশ ও উপুড় করে দিতে হবে । এ সময় নবজাতকের শরীরে পুষ্টি ও পানির চাহিদা বেড়ে যায়। তাই তাকে বেশি করে বারেবারে মায়ের দুধ ও ফুটানো পানি ঠান্ডা করে খাওয়াতে হবে ।
২। যদি দুই তিন দিনের মধ্যে ত্বকের হলুদ বর্ণ বা জন্ডিসের মাত্রা না কমে অথবা প্রথম থেকেই যদি ত্বকের হলুদ বর্ণ বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।
৩। জন্ডিসের মাত্রা বেশি হলে প্রয়োজনে নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করে ফটোথেরাপি দিতে হবে ।
৪। ফটোথেরাপি বর্তমানে সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর চিকিৎসা। এর মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা (কারো কারো ক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা)-র মধ্যে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা (অর্থাৎ জন্ডিস) কমানো সম্ভব ।
৫। শিশুকে একনাগাড়ে ৪৫ মিনিট ফটোথেরাপি ইউনিটে এবং পরবর্তী ১৫ মিনিট বিছানায় বা কোলে বিশ্রামে রাখতে হবে । বিশ্রামের সময়েই তাকে খাওয়াতে হয় । ফটোথেরাপি চলাকালীন নবজাতকের চোখ ও ছেলেদের ক্ষেত্রে জননাঙ্গ পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে । নতুবা চোখ ও লিঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে ।
৬। লক্ষ রাখতে হবে ফটোথেরাপি চলাকালীন শিশুর ত্বকের বেশিরভাগ অংশ যাতে আলোতে আনা যায়, সেজন্য শিশুকে একটু পরপর এপাশ-ওপাশ ও উপুড় করে দিতে হবে ।
৭। চিকিৎসা চলাকালীন মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে পানি খাওয়াতে হবে । আলাদাভাবে পানি খাওয়ানোর প্রয়োজন আছে কি না, এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।
৮। যদি মায়ের রক্তের গ্রুপ আর এইচ নেগেটিভ এবং বাবার আর এইচ পজিটিভ হয়, সেক্ষেত্রে নবজাতকের জন্মের আগে চিকিৎসককে অবশ্যই তা জানিয়ে রাখতে হবে । জন্মের পরপরই নবজাতককে অবশ্যই কোনো শিশু রোগের চিকিৎসককে দেখাতে হবে ।
আরও দেখুনঃ