শিশুর চৌদ্দ বছর বয়স [ সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা ]

শিশুর চৌদ্দ বছর বয়স [ সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা ] – বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “শিশুর মন ও শিক্ষা” সিরিজের “সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা ” বিভাগের একটি পাঠ। আমার বাড়িতে এলে প্রবেশ পথের ডান দিকের দেয়ালে একটি জানালা পড়ে। সময়ে বিপরীত দিকের দেয়ালে জানালা দিয়ে রোদ পড়ে। প্রবেশ পথে ঢুকেই যদি রাস্তার দিকে মুখ করে দাঁড়াও তাহলে তুমি কোন দিকে তাকাবে ?  সূর্যাস্তের যদি ক-এর সৈন্যসংখ্যা খ-এর সৈন্যসংখ্যা থেকে বেশি হয় তাহলে প্রথমেই উচিত খ-কে আক্রমণ করা অথবা জলপথে গ-কে আক্রমণ করা, কখনই ক-কে নয়। যদি ক-এর সৈন্যসংখ্যা কম হয় তাহলে অবশ্যই তাকে আক্রমণ করা ঠিক। যদি গ-এর নৌসেনাবল আমাদের থেকে বেশি হয় তাহলে খ-এর অথবা ক-এর প্রতি আক্রমণ করা ঠিক হবে, গ কে নয়।

সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা | চৌদ্দ বছর বয়স | শিশুর মন ও শিক্ষা

যদি তাদের নৌসেনার সংখ্যা কম হয় তাহলে অবশ্য গ-কেই প্রথম জলপথে আঘাত হানতে হবে। সকলের সেনাবল ও নৌ-বল এই রকম :

শিশুর চৌদ্দ বছর বয়স [ সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা ]

★ ৪৬.

স্বপন বললো : “দুর্গের প্রথম কামান দাগার শব্দ শোনার ১০ মিনিট আগেই আমি দেয়াল ঘড়ির ঘণ্টাধ্বনি শুনেছি। আমি শুনিনি, কিন্তু ঘণ্টাধ্বনি যে একটির বেশি বেজেছিল তা মনে আছে, এবং আমি নিশ্চিত যে বিজোড় সংখ্যায় বেজেছিল।” স্বপন সারাটা সকালই বাইরে ছিল, তার দেয়াল ঘড়িটি সেদিন বিকেলেই পাঁচটা বাজতে পাঁচ মিনিটে বন্ধ হয়ে যায়। কটার সময়ে প্রথম কামান দাগা হয়েছিল বলে তোমার মনে হয়?

সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা | চৌদ্দ বছর বয়স | শিশুর মন ও শিক্ষা

৪৭.

নিনি ১৫ টাকার টিকিট কেটে ট্রেনে উঠে পড়েছে। সব ট্রেনই এখান থেকে শেওড়াফুলি স্টেশানে থমে। সেখান থেকে কোনো ট্রেন যায় সিংগুর, তারকেশ্বরের দিকে, কেউ যায় ব্যাণ্ডেল, কাটোয়ার দিকে। মাঝখানে কোথাও থামে না। শেওড়াফুলি, সিংগুর এবং ব্যাণ্ডেলের ভাড়া ১৫ টাকা, তারকেশ্বর অথবা কাটোয়ার ভাড়া ৩০ টাকা। নিনি তারকেশ্বরের গাড়িতেওঠে নি। কোন স্টেশনে নিনি যাচ্ছে বলে তোমার মনে হয়।

৪৮.
বলা হয় যে শত শত বছর আগে ডোডোল্যাণ্ডের সব মাছরাঙাদের পাগুলো ছিল ৬ ইঞ্চি মতো লম্বা, ঠোঁটগুলো ছিল ২ ইঞ্চি মতো করে। তারা জলের মধ্যে হেঁটে হেঁটে ঠোঁট দিয়ে মাছ ধরে ধরে খেতো। পাখিদের পা ও ঠোঁটের মাপ খুব জোর আধ ইঞ্চি মতো ছোট বড়ো হতো। যে সব পাখির মা বাবাদের পা অথবা ঠোট ছোট হতো তাদেরও (সন্তানদেরও তেমনি হতো। আবার বড় ঠোঁট বা পা-অলা মা বাবাদের ছেলেমেয়েদেরও তেমনি হতো। এই রকমটি চলছিল প্রজন্ম প্রজন্ম ধরেই। এবারে, তখনকার দিনে জলাশয়গুলোতে ইঞ্চি চারেক মতো জল থাকতো।

ক্রমশ জল বাড়তে বাড়তে সেখানে এখন জল প্রায় ১ ফুট মত গভীর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরনো দিনের মাছরাঙারা এখন হয় জলে ডুবে যাবে অথবা খাদ্যের অভাবে উপোস করে থাকবে, কারণ ওই পাখিরা সাঁতার জানেও না শিখতেও পারে না। এখন শত শত বছর পরে ওই পাখিদের কী অবস্থা হয়েছে বলে তোমার মনে হয় ?

সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা | চৌদ্দ বছর বয়স | শিশুর মন ও শিক্ষা

★ ৪৯.
ক্যাপ্টেন দাস ও তাঁর ছেলে কুনালকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেল। বাবার বুকে আর ছেলের পিঠে গুলির চিহ্ন। দুজনই সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। যদি খুবই কাছ থেকে গুলি করা হয়— যেমন কেউ যদি নিজেই নিজেকে গুলি করে— তাহলে গুলির ছিদ্রের পাশটা কালো কালো হবে, এমনকি ত্বকে (চামড়ায়) বা কাপড়ে পোড়া দাগ থাকবে। দূর থেকে গুলি করলে তেমন কোনো চিহ্ন থাকবে না। একটা বিরাট হলঘরের ঠিক মাঝখানে দেহদুটি পড়ে ছিল। ঘরটা এত বড় যে একটা রাইফেল রেঞ্জ হতে পারে।

মেঝেতে ভিজে বালি ছড়ানো ছিল। ঘরের মধ্যে দুজন লোকের পায়ের ছাপই ছিল। ঘরের দরজার বা জানালার কাছে দাঁড়িয়ে ঘরের মধ্যে যে কোনো স্থানেই বন্দুক তাক করা যায়, সেখানে অবশ্য কোনো পায়ের চিহ্ন পড়বে না। ক্যাপ্টেন দাসের শরীরের তলায় একটি বন্দুক পাওয়া গেছে, কুনালের দেহের কাছে পাওয়া যায় নি। দুটি মৃতদেহের গায়ে কোট ছিল, কোটের গুলি পথে কালো দাগ ছিল এবং কাপড়ে পোড়া দাগ ছিল।

ক্যাপ্টেন দাস ছেলেকে এতো ভালবাসতেন যে তার ক্ষতি করার চাইতে তিনি বরং মৃত্যুও কামনা করবেন। আত্মরক্ষার জন্যেও তিনি পুত্রকে আঘাত করতে পারেন এটা একেবারেই অসম্ভব। অনেকে মনে করে যে কুনাল মনে মনে বাবাকে অপছন্দ করতো এবং বাবার মৃত্যুর পর পৈত্রিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবার বাসনা পোষণ করতো।

সিরিল বার্টের যুক্তি-বিচার ক্ষমতা | চৌদ্দ বছর বয়স | শিশুর মন ও শিক্ষা

 

i) ক্যাপ্টেন দাসের মৃত্যুর কারণ কী— খুন, দুর্ঘটনা অথবা আত্মহত্যা ? ii) কুনালের মৃত্যুর কারণ কী— খুন, দুর্ঘটনা অথবা আত্মহত্যা ?

৫০. ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ— আবরণ থেকে কম করে ৫০ মাইল ভিতর পর্যন্ত স্তরটি প্রধানত শিলা

পাথরে আচ্ছন্ন। শিলা ও পাথর সমপরিমাণ জলের তুলনায় তিনগুণ ভারি হয়ে থাকে। সব থেকে ভারি যে বস্তু ভূপৃষ্ঠে পাওয়া গেছে তা হল ধাতু। কিন্তু পৃথিবীর বাইরের এই আবরণে ধাতু তুলনামূলকভাবে খুবই কম দেখা যায়। একই আকারের জলের একটা গোলাকৃতি পৃথিবীর তুলনায় আসল পৃথিবীটা পাঁচগুণের উপর ভারি। এই তথ্য থেকে পৃথিবীর মধ্যভাগ ও কেন্দ্রভাগ কোন জিনিস দিয়ে ভরা আছে তা কি বোঝা যায়— জল, শিশা ও পাথর, ধাতু অথবা গ্যাস?

আরও দেখুন:

Leave a Comment